রোলেক্স ঘড়ির দাম কত

রোলেক্স ঘড়ির দাম কত: মডেলভেদে সম্পূর্ণ তালিকা

বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল ঘড়ির ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে রোলেক্স (Rolex) অন্যতম। সুইজারল্যান্ডে জন্ম নেওয়া এই ব্র্যান্ডটি শুধু সময় দেখার যন্ত্র নয়, বরং মর্যাদা, ঐতিহ্য ও বিলাসিতার প্রতীক। প্রতিটি রোলেক্স ঘড়ির পিছনে থাকে নিখুঁত কারিগরি দক্ষতা, মূল্যবান উপকরণ এবং প্রিমিয়াম ডিজাইন। 

বাংলাদেশেও ধনী এবং ঘড়ি–প্রেমীদের মধ্যে রোলেক্স ঘড়ির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। তবে অনেকের প্রশ্ন—“রোলেক্স ঘড়ির দাম কত?” মডেলভেদে রোলেক্স ঘড়ির দাম, বৈশিষ্ট্য, এবং বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায় তার সম্পূর্ণ তালিকা তুলে ধরব।

রোলেক্স ঘড়ির দাম কত বাংলাদেশে

রোলেক্স ঘড়ির দাম কত

বাংলাদেশে রোলেক্স ঘড়ির দাম সাধারণত ৳৭–৮ লক্ষ টাকা থেকে শুরু হয়, তবে বিশেষ মডেল বা সোনা, প্লাটিনাম ও হীরকখচিত সংস্করণের দাম কোটি টাকার উপরে চলে যায়।

নিচের টেবিলে জনপ্রিয় কিছু মডেল ও তাদের আনুমানিক দাম দেখানো হলো:

Rolex মডেলআনুমানিক দাম (BDT)বৈশিষ্ট্য
Submariner৳৮,০০,০০০ – ৳১৫,০০,০০০ডাইভিং ঘড়ি, স্টেইনলেস স্টিল বডি
Datejust৳৭,৫০,০০০ – ৳১২,০০,০০০ক্লাসিক ডিজাইন, ড্রেস ওয়াচ
Daytona৳১৫,০০,০০০ – ৳৩০,০০,০০০রেসিং স্পোর্টস ক্রোনোগ্রাফ
Day-Date৳২৫,০০,০০০ – ৳৫০,০০,০০০+সোনা/প্লাটিনাম বডি, প্রেসিডেন্ট সিরিজ
GMT-Master II৳১০,০০,০০০ – ৳১৮,০০,০০০ডুয়াল টাইম জোন, ট্রাভেলার্সের জন্য জনপ্রিয়
Yacht-Master৳১২,০০,০০০ – ৳২০,০০,০০০নৌবাহিনী ও সমুদ্রপ্রেমীদের জন্য আদর্শ

বাংলাদেশে রোলেক্স ঘড়ির দাম নির্ধারণে যেসব বিষয় প্রভাব ফেলে

রোলেক্স ঘড়ির দাম কত

রোলেক্স ঘড়ির দাম সব দেশে একরকম নয়। বাংলাদেশে এর দাম নির্ভর করে কিছু বিশেষ বিষয়ে:

  • মডেলভেদে ভিন্নতা – Submariner বা Datejust তুলনামূলক সস্তা হলেও Daytona বা Day-Date অনেক বেশি দামী।
  • উপাদান – স্টেইনলেস স্টিল মডেলগুলো তুলনামূলক সাশ্রয়ী, কিন্তু সোনা, প্লাটিনাম বা হীরকখচিত মডেলের দাম কয়েকগুণ বেশি।
  • নতুন বনাম পুরোনো (Pre-owned) – পুরোনো অথচ ভালো কন্ডিশনের ঘড়ি তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যায়।
  • শোরুম ও আমদানির উৎস – অনুমোদিত শোরুম থেকে কিনলে দাম বেশি হলেও গুণগত মান ও ওয়ারেন্টি নিশ্চিত থাকে।
  • কাস্টমাইজেশন – বিশেষ খোদাই, হীরক বসানো বা সীমিত সংস্করণে দাম বাড়ে।

জনপ্রিয় রোলেক্স মডেলভেদে দাম

Rolex Submariner

  • আনুমানিক দাম: ৳৮,০০,০০০ – ৳১৫,০০,০০০
  • বৈশিষ্ট্য: ডাইভিং-এর জন্য বিখ্যাত, শক্তপোক্ত স্টিল বডি, জলরোধী ডিজাইন।

Rolex Datejust

  • আনুমানিক দাম: ৳৭,৫০,০০০ – ৳১২,০০,০০০
  • বৈশিষ্ট্য: ক্লাসিক ও ড্রেসি লুক, প্রতিদিনের ব্যবহার ও ফরমাল অনুষ্ঠানের জন্য উপযুক্ত।

Rolex Daytona

  • আনুমানিক দাম: ৳১৫,০০,০০০ – ৳৩০,০০,০০০
  • বৈশিষ্ট্য: রেসিং ক্রোনোগ্রাফ, উচ্চ নির্ভুলতা, স্পোর্টস ঘড়ি প্রেমীদের জন্য জনপ্রিয়।

Rolex Day-Date (President)

  • আনুমানিক দাম: ৳২৫,০০,০০০ – ৳৫০,০০,০০০+
  • বৈশিষ্ট্য: সম্পূর্ণ সোনা বা প্লাটিনাম দিয়ে তৈরি, প্রেসিডেন্টদের পছন্দের ঘড়ি।

Rolex GMT-Master II

  • আনুমানিক দাম: ৳১০,০০,০০০ – ৳১৮,০০,০০০
  • বৈশিষ্ট্য: ডুয়াল টাইম জোন ফিচার, ভ্রমণকারীদের জন্য আদর্শ।

Rolex Yacht-Master

  • আনুমানিক দাম: ৳১২,০০,০০০ – ৳২০,০০,০০০
  • বৈশিষ্ট্য: সমুদ্রযাত্রা ও ওয়াটার স্পোর্টস প্রেমীদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি।

বাংলাদেশে কোথায় রোলেক্স ঘড়ি পাওয়া যায়

রোলেক্স ঘড়ির দাম কত

বাংলাদেশে অরিজিনাল রোলেক্স ঘড়ি কেনার জন্য কিছু নির্ভরযোগ্য উৎস রয়েছে:

  • অনুমোদিত শোরুম – ঢাকায় কিছু লাক্সারি ওয়াচ শোরুম রোলেক্স আমদানি করে।
  • অনলাইন প্ল্যাটফর্ম – কিছু আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইট থেকে অর্ডার করলে বাংলাদেশে ডেলিভারি পাওয়া যায়।
  • প্রি-ওন্ড মার্কেট – ব্যবহৃত ঘড়ির মার্কেটে তুলনামূলক সাশ্রয়ী দামে রোলেক্স কেনা যায়, তবে সতর্ক থাকতে হবে আসল–নকল যাচাইয়ে।

রোলেক্স ঘড়ির দাম বনাম অন্যান্য ব্র্যান্ড

  • Rolex বনাম Omega – Omega তুলনামূলক সস্তা হলেও Rolex বেশি মর্যাদাপূর্ণ।
  • Rolex বনাম Tag Heuer – Tag Heuer স্পোর্টস ঘড়ির জন্য জনপ্রিয়, কিন্তু Rolex দীর্ঘস্থায়ী ও উচ্চমূল্যের প্রতীক।
  • Rolex বনাম Patek Philippe – Patek Philippe রোলেক্সের চেয়ে আরও দামী, তবে রোলেক্সের ব্র্যান্ড ভ্যালু অনেক বেশি।

বিনিয়োগ হিসেবে রোলেক্স ঘড়ি

রোলেক্স শুধু একটি ঘড়ি নয়, বরং একটি বিনিয়োগ। অনেক সময় এর দাম বছর বছর বাড়তে থাকে।

  • দাম বৃদ্ধি – কিছু মডেলের বাজারমূল্য সময়ের সাথে দ্বিগুণ হয়ে যায়।
  • কালেকশন ভ্যালু – সংগ্রাহকরা বিরল মডেলের জন্য কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ করেন।
  • রিসেল মার্কেট – ব্যবহৃত বাজারেও রোলেক্সের চাহিদা সবসময় উঁচুতে।

বাংলাদেশি ক্রেতাদের জন্য টিপস

রোলেক্স ঘড়ির দাম কত
  1. আসল ও নকল চিনবেন কিভাবে – সিরিয়াল নাম্বার, ওজন, ওয়াচ হ্যান্ডসের মসৃণ চলাচল ইত্যাদি খেয়াল করুন।
  2. বিশ্বস্ত উৎস থেকে কিনুন – অনুমোদিত শোরুম বা পরিচিত কালেক্টরদের কাছ থেকে কেনা নিরাপদ।
  3. বাজেট নির্ধারণ করুন – দাম লাখ থেকে কোটি পর্যন্ত হতে পারে, তাই বাজেট অনুযায়ী মডেল বাছাই করুন।
  4. ওয়ারেন্টি চেক করুন – আসল রোলেক্স ঘড়িতে আন্তর্জাতিক ওয়ারেন্টি থাকে।

উপসংহার 

সংক্ষেপে, বাংলাদেশে রোলেক্স ঘড়ির দাম কত তার উত্তর হলো—প্রায় ৳৭ লক্ষ থেকে শুরু করে কোটি টাকার উপরে পর্যন্ত। দাম নির্ভর করে মডেল, উপাদান, ও কেনার জায়গার উপর। Submariner, Datejust, Daytona থেকে শুরু করে Day-Date বা GMT-Master II—সব মডেলই তাদের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলাদা।

রোলেক্স শুধু একটি ঘড়ি নয়, বরং মর্যাদার প্রতীক এবং দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ। সঠিক জায়গা থেকে আসল ঘড়ি কিনতে পারলে এটি আপনার জীবনের সেরা বিলাসবহুল সম্পদ হতে পারে।

FAQs – রোলেক্স ঘড়ির দাম কত: মডেলভেদে সম্পূর্ণ তালিকা

Q1. বাংলাদেশে রোলেক্স ঘড়ির দাম কত থেকে শুরু হয়?

Ans: বাংলাদেশে রোলেক্স ঘড়ির দাম সাধারণত প্রায় ৳৭–৮ লক্ষ টাকা থেকে শুরু হয়। দাম মডেল ও উপাদানের উপর নির্ভর করে ভিন্ন হয়। স্টেইনলেস স্টিলের সাধারণ মডেলগুলো সবচেয়ে কম দামে পাওয়া যায়।

Q2. সবচেয়ে জনপ্রিয় রোলেক্স মডেল কোনটি?

Ans: বাংলাদেশে Rolex Submariner এবং Datejust মডেল সবচেয়ে জনপ্রিয়। Submariner স্পোর্টস ও ডাইভিং-এর জন্য বিখ্যাত, আর Datejust তার ক্লাসিক ডিজাইনের কারণে সবার পছন্দের তালিকায় রয়েছে। উভয় মডেলই দাম ও মানের ভারসাম্য রাখে।

Q3. সোনা বা হীরকখচিত রোলেক্স ঘড়ির দাম কত?

Ans: রোলেক্সের সোনা ও হীরকখচিত মডেল সাধারণ মডেলের তুলনায় অনেক বেশি দামী। এসব ঘড়ির দাম সাধারণত প্রায় ৳৫০ লক্ষ থেকে শুরু হয়ে ১ কোটি টাকারও উপরে চলে যায়। লিমিটেড এডিশন হলে দাম আরও বাড়ে।

Q4. বাংলাদেশে রোলেক্স কোথায় কিনতে পাওয়া যায়?

Ans: বাংলাদেশে অনুমোদিত লাক্সারি ঘড়ির শোরুম থেকে রোলেক্স ঘড়ি কেনা যায়। এছাড়াও কিছু আন্তর্জাতিক অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকেও অর্ডার করা সম্ভব। তবে আসল নিশ্চিত করতে সবসময় বিশ্বস্ত উৎস বেছে নেওয়া জরুরি।

Q5. রোলেক্স ঘড়ি কি বিনিয়োগ হিসেবে ভালো?

Ans: রোলেক্স ঘড়ি বিনিয়োগ হিসেবে একটি দারুণ পছন্দ। অনেক মডেলের দাম সময়ের সাথে বেড়ে যায় এবং সংগ্রাহকদের কাছে উচ্চমূল্যে বিক্রি করা যায়। পুনরায় বিক্রির বাজারেও এর চাহিদা সবসময় উঁচুতে থাকে।

Q6. বাংলাদেশে রোলেক্স ঘড়ির দাম কেন ভিন্ন হয়?

Ans: দাম ভিন্ন হয় মডেল, উপাদান, নতুন না সেকেন্ড হ্যান্ড এবং কেনার জায়গার উপর। অনুমোদিত শোরুমে দাম তুলনামূলক বেশি হলেও আসল পণ্যের নিশ্চয়তা থাকে। প্রি-ওন্ড বা অনলাইনে সস্তা হলেও নকলের ঝুঁকি থাকে।

Q7. রোলেক্স ঘড়ির সবচেয়ে দামী মডেল কোনটি?

Ans: রোলেক্স Day-Date (President) এবং হীরকখচিত বিশেষ সংস্করণগুলো সবচেয়ে দামী। এসব ঘড়ির দাম কোটি টাকার উপরে চলে যায়। বিলাসবহুল উপকরণ ও সীমিত সংস্করণের কারণে এগুলোর মূল্য বেশি হয়।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *